নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: মহান স্বাধীনতা দিবসে পুলিশের গ্রেফতারের ভয় না থাকায় গর্তে লুকিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান অবশেষে গর্ত থেকে উঁকি দিয়েছেন।
সোমবার (২৬ মার্চ) সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তিনি।
অথচ দলীয় চেয়ারপার্সণের মুক্তির দাবীতে চলমান আন্দোলন সংগ্রামে অনুপস্থিত কাজী মনির ছিলেন আত্মগোপনে। তার পলায়নে আর জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক মামুন মাহমুদ কারাগারে বন্দি থাকায় বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে। কিন্তু নির্বকার সুবিধাবাদী নেতা কাজী মনির ঠিকই নিজের গা বাঁচিয়ে চলেছেন। এবার স্বাধীনতা দিবসে পুলিশের গ্রেফতারের ভয় না থাকায় অবশেষে রাজপথে দেখা গেছে এই সুচতুর রাজনীতিবীদকে।
সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান গত বছরের ফেব্রুয়ারীতে কমিটি গঠন হওয়ার পর প্রায় এক বছরে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে উজ্জীবিত করতে পারেননি। বরং জাতীয় বা দলীয় কর্মসূচি পালনে বারবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর সর্বপ্রথম জেলা বিএনপি’র বড় আয়োজন কর্মীসভায়ও চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস সে অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন।
এরপর থেকে যে কোন কর্মসূচিতে আর নেতাকর্মীদের নিয়ে মনে রাখার মতো কোন আয়োজন করতে পারেননি কাজী মনির। এমনকি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার প্রতিবাদে ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের ধাওয়ায় নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে যান জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনির।
সর্বশেষ বিএনপি’র চেয়াপার্সণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া আরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় সাজার রায় ঘোষনার দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান এই সুযোগ সন্ধানী নেতা। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত গ্রেফতার হয়ে আর মামলা মোকদ্দমায় নাজেহাল হলেও কাজী মনিরের গায়ে এর আঁচ পর্যন্ত লাগেনি।
গত এক বছরে ২৬ সদস্যের আংশিক কমিটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে ব্যর্থ এই সভাপতি ২৬ কাঠি কখনো একই করতে পারেননি। ফলে নেতাকর্মীদের কাছে জেলা বিএনপি’র সভাপতির মতো দায়িত্বপূর্ণ পদের জন্য অয়োগ্য হয়ে পরেন কাজী মনির। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উজ্জিবীত না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জেলা বিএনপি’র সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকারকে। আর মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের জন্য উচ্চ আদালতে আইনী লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকায় তৈমূরের অনুপস্থিতিতে জেলা বিএনপি’র নেতৃত্বের ভার এসে পরে সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের কাঁধে। বিএনপি’র সাইনবোর্ডে সরকারী দলের দালালী করা আজাদ বিশ্বাসের নেতৃত্ব মানতে চাইছে না জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। আর তাই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে।