নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, সংগ্রাম আর ঐতিহ্যের ৭০ বছর পূর্তি আজ। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে শেখ সাফায়েত আলম সানী ও সাধারন সম্পাদক হিসেবে মিজানুর রহমান এবং মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসেবে হাবিবুর রহমান রিয়াদ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও অদ্যবধি ছাত্রলীগের গায়ে কোন আঁচড় লাগতে দেয়নি তারা।
মূলত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের নিদের্শে জেলা ছাত্রলীগ ও তার পুত্র অয়ন ওসমানের নির্দেশে মহানগর ছাত্রলীগ পরিচালিত হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগের গায়ে আদৌ কলঙ্কের কালিমা লেপন হয়নি বলে অভিমত তৃণমূলের।
তবে জেলার সাতটি থানা এলাকার মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের অধীন তিনটি থানা ছাত্রলীগের পুনর্গঠন হলেও ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠন হচ্ছে না প্রায় দেড় যুগ ধরে।
অপরদিকে, মহানগর ছাত্রলীগের আওতাধীন সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ছাত্রলীগের কমিটিও এক যুগ পেরিয়ে গেছে।
ফলে চারটি থানা ছাত্রলীগে অছাত্রদের নেতৃত্বের কারনে দীর্ঘ বছর যাবত কুক্ষিগত হয়ে আছে সদর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ।
তবে আশার বানী শুনিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানী। তিনি নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডিকে জানান, ‘ইতিমধ্যেই হাসিবকে সভাপতি ও সজীবকে সাধারন সম্পাদক করে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হলেও সড়ক দূর্ঘটনায় হাসিব মারা যাওয়ায় পুনরায় রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।’
এছাড়াও রাশেদ মাহমুদকে সভাপতি ও রাসেল মাহমুদকে সাধারন সম্পাদক করে সোনারগাঁ থানা ছাত্রলীগ এবং মামুন মোল্লাকে সভাপতি করে আড়াইহাজার থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়েছে বলে আরও জানান শেখ সাফায়েত আলম সানী।
তিনি বলেন, ‘জেলার অধীনস্থ শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনই বাকী রয়েছে। অচিরেই এই কমিটির পাশাপাশি উপজেলা এবং বন্দর থানার ইউনিয়ন কমিটি গুলোও গঠন করা হবে।’
আর মহানগরের আওতাধীন তিনটি থানা কমিটির ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো: হাবিবুর রহমান রিয়াদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
জানাযায়, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের পদ আকড়ে বসে আছে বায়োজৈষ্ঠ্য নেতারা। যাদের মধ্যে রয়েছে সংগঠনের সভাপতি আবু মুহাম্মদ শরীফুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান। যাদের উভয়ের বয়সই প্রায় ৪০।
এছাড়াও বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান, সহ-সভাপতি মুছাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদসহ অন্যান্য সদস্যদের ছাত্র রাজনীতির বয়সও পেরিয়ে গেছে অনেক আগে।
আর তাই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্দর ও ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের প্রায় সবাইকেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন, জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া, জীবন ও যৌবনের উত্তাপে শুদ্ধ সংগঠন, সোনার বাংলা বিনির্মাণের কর্মী গড়ার পাঠশালা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বিদ্যার সঙ্গে বিনয়, শিক্ষার সঙ্গে দীক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবীয় গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অতিক্রম করছে পথচলার ৭০ বছর। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারী সময়ের দাবীতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সময়ের প্রয়োজন মেটাতেই এগিয়ে চলা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের ছয় দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারী তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলী হলে তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এক ঝাঁক মেধাবী ও প্রগতিশীল ভাবাদর্শের ছাত্রনেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভার মধ্য দিয়ে এ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা ঘটে। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ।