নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়াস্থ সোনালী ব্যংকের প্রধাণ কার্যালয় থেকে রুহুল আমীন নামের এক গ্রাহকের চুরি হওয়া তিন লাখ টাকার মধ্যে আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করেছে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। সেই সাথে চোর সিন্ডিকেটের দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে প্রধাণ আসামী জাহাঙ্গির এখনও পলাতক রয়েছে। চুরি হওয়া টাকার মধ্যে বাকী পঁঞ্চাশ হাজার টাকা ও সিন্ডিকেটের বাকী সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মো: শরিফুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগষ্ট) সকালে এই ঘটনা ঘটে। গ্রেফতারকৃত দ্ইু চোর হলো সাগর (৩৪) ও বেবী (৩০)।
টাকার মালিক এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে চাষাঢ়াস্থ সোনালী ব্যাংকে তিন লাখ টাকা জমা দিতে আসেন উত্তর চাষাঢ়ার অধিবাসী আ: লতিফ হাওলাদারের পুত্র রুহুল আমীন। বিদেশ যাবার জন্য পারিবারিকভাবে এই টাকা জোগাড় করে ব্যাংকে জমা দিতে আসেন বলে জানান রুহুল। টাকা জমা দেওয়ার লাইনে দাড়ানো অবস্থায় ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে টাকার ব্যাগ রেখে মানিব্যাগ থেকে খুচরা টাকা বের করার সময় চোর সিন্ডিকেটের একজন রুহুল আমীনকে বলেন, ভাই আপনার টাকা পকেট থেকে নীচে পড়ে গেছে। রুহুল আমীন মাটি থেকে টাকা তুলতে যাওয়ার সময়ই পাশে দাড়িয়ে থাকা চোর সিন্ডিকেটের একজন সেই টাকার ব্যাগ নিয়ে চলে যায়। রুহুল আমীন ঘুরে টাকার ব্যাগ দেখতে না পেয়ে চিৎকার করেন। এ সময় একজন ব্যাংক থেকে দৌড়ে পালানোর সময় ব্যাংকের নিরাপত্তারক্ষী ও জনগন মিলে দৌড়ে জিয়া হলের সামনে থেকে সাগর নামে এক চোরকে ধরতে সক্ষম হয়।
সাগরকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে জানতে পারে, টাকা বর্তমানে ঢাকার রায় সাহেব বাজারে সাগরের বোন বেবীর কাছে রয়েছে। পুলিশ কৌশলে সাগরকে দিয়ে ফোন করিয়ে বেবীকে টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আসতে বলে। সাগরের কথা মতো বেবী টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আসলে পুলিশ টাকাসহ বেবীকে আটক করে। তখন বেবীর কাছে চুরি হওয়া তিন লাখ টাকার মধ্যে আড়াই লাখ টাকা পাওয়া যায়। বাকী পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যাগ নিয়ে ব্যাংক থেকে পালানো জাহাঙ্গিরের কাছে রয়েছে বলে জানায় বেবী। গ্রেফতারকৃত সাগর ও বেবী চট্রগ্রামের বন্দর থানাধীণ মৃত আবুল হোসেনের সন্তান। তারা ঢাকার রায়সাহেব বাজহার এলাকার জাহাঙ্গিরের বাসার ভাড়াটিয়া।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘ক’ সার্কেল) মো: শরিফুদ্দিন জানান, একটি সিন্ডিকেট প্রকারনার মাধ্যমে এভাবে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা চুরি কওে আসছে। এরা সম্ভবত সেই সিন্ডিকেটের অংশ। এদেও মাধ্যমে পুরো সিন্ডিকেটটি ধরার চেষ্টা অব্যহত থাকবে। তাছাড়া আজকে এই চুরির ঘটনা ঘটার পাঁচ মিনিট আগে আমি নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি থানায় এসএমএস পাঠিয়েছি, যাতে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন অফিসের বেতন দেওয়ার লক্ষ্যে বড় ধরনের টাকা উত্তোলনের সময় যাতে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয়। তিন লাখ টাকা চুরি হওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করতে পারা পুলিশের একটা বড় সফলতা। নাগরিক সেবা প্রদানে আমাদের এই চেষ্টা অব্যহত থাকবে।
তবে যেখানে এতো বড় একটা চুরির ঘটনা ঘটলো, সেই সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান ঘটনাটি জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এবং বলেন, এটি ব্যাংকের বাইরে ঘটে থাকতে পারে। তবে ব্যাংকের গেটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য আকিদুল সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংকের ভিতর থেকে একটি লোক দৌড়ে বের হলে আমি এবং আমার সহকর্মী ইমরানসহ লোকজন মিলে ধাওয়া করে জিয়া হলের সামনে থেকে একজনকে ধরে আনি।