নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী হলেও ভিক্ষাবৃত্তির পরিবর্তে ফুটপাতের দ্বারে বসে কর্ম করেই সংসার চালাতেন পিতৃহারা সংখ্যালঘু হকার মানিক মোদক (৩২)।
কিন্তু নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাড়াস্থ সোনালী ব্যাংকের সামনে ফুটপাতে বসে সবসময় পান-সিগারেট বিক্রি করলেও কয়েকমাস যাবত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকায় দেওভোগ ভূইয়ারবাগ এলাকায় মাকে নিয়ে বসবাস করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল মানিককে।
তাই বেঁচে থাকার তাগিদে উচ্ছেদের হাত থেকে বাঁচতে চাষাড়া এলাকা ত্যাগ করে এখন নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের পাশে ফুটপাতে বসে দোকানদারী শুরু করেছিলেন মানিক। কিন্তু বিধি বাম!
সদর মডেল থানার অতি উৎসাহী উপ-পরিদর্শক রফিকের লাঠিচার্জে এই প্রতিবন্ধী সংখ্যালঘু হকার মানিককে রক্তাত্ব হয়ে এখন যেতে হয়েছে হাসাপাতালে।
মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে এই ঘটনা ঘটার পর সাধারন হকারদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত রক্তাত্ব অবস্থায় হকার মানিককে সহযোগীরা উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
সংবাদ পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে মানিকের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন, নারায়ণগঞ্জ হকার্স সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো: আসাদুল ইসলাম আসাদ। তিনি এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবী করে বলেন, ‘মানিক অন্যান্য হকারদের মত দৌঁড়াতে সক্ষম নন, যে পুলিশের উচ্ছেদ দেখে অন্যত্র পালিয়ে যেতে পারবেন। জন্ম থেকেই তার পা বিকলঙ্গ থাকায় তিনি হুইল চেয়ারে বসে পান সিগারেট বিক্রি করতেন। কিন্তু এসআই রফিক তাকে ফুটপাতে বসার কারনে লাঠিপেটা করে রক্তাত্ব করে চরম অন্যায় কাজ করেছেন। যা সাধারন হকাররা কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারবেন না।’
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত মানিকের মাথায় তিনটি সেলাই লেগেছে।
এব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামরুল ইসলাম পিপিএম নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডিকে জানান, ‘পুলিশের লাঠিচার্জে প্রতিবন্ধী হকার আহত হওয়ার ঘটনাটি তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে চলমান হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে নগরীর হকাররা। এরপর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারী ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে সাংসদ শামীম ওসমান, মেয়র আইভী ও হকারদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে। সেই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তখন অজ্ঞাত ৪/৫ শ’ হকারের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।