নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: গল্পের হারাধনের দশটি ছেলে হারিয়ে যাওয়ার মতো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র ২৬ সদস্যের মধ্যে সব হারিয়ে এখন অবশিষ্ট রয়েছেন মাত্র দুই জন। গত রবিবার দলীয় চেয়ারপার্সণের মুক্তির দাবীতে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে দেখা মিলেছে জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জল হোসাইনের। জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানের খামখেয়ালী আর স্বেচ্ছাচারিতার কারনে দিনকে দিন এই কমিটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা আর এভাবে চলতে থাকলে কর্মসূচি পালনের জন্য আর নেতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে আশংকা তৃণমূলের।
সূত্র জানায়, বিএনপি’র চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে চলমান আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচিতে হযবরল অবস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র। দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে বৃহৎ এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে না পারায় ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে তাদের মনে। জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান শুরু থেকেই আন্দোলন বিমূখ হওয়ায় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদই নেতাকর্মীদের নিয়ে গুছিয়ে সংগঠনটি পরিচালনা করে আসছিলেন সুচারুভাবে। কিন্তু প্রায় দেড় মাস যাবত মামুন মাহমুদ কারাগারে বন্দি থাকায় সে শূণ্যস্থান পূরণ হয়নি আজো।
সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান গত বছরের ফেব্রুয়ারীতে কমিটি গঠন হওয়ার পর প্রায় এক বছরে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে উজ্জীবিত করতে পারেননি। বরং জাতীয় বা দলীয় কর্মসূচি পালনে বারবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর সর্বপ্রথম জেলা বিএনপি’র বড় আয়োজন কর্মীসভায়ও চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস সে অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন।
এরপর থেকে যে কোন কর্মসূচিতে আর নেতাকর্মীদের নিয়ে মনে রাখার মতো কোন আয়োজন করতে পারেননি কাজী মনির। এমনকি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার প্রতিবাদে ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের ধাওয়ায় নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে যান জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনির।
সর্বশেষ বিএনপি’র চেয়াপার্সণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া আরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় সাজার রায় ঘোষনার দিন ধার্য হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান এই সুযোগ সন্ধানী নেতা। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত গ্রেফতার হয়ে আর মামলা মোকদ্দমায় নাজেহাল হলেও কাজী মনিরের গায়ে এর আঁচ পর্যন্ত লাগেনি।
গত এক বছরে ২৬ সদস্যের আংশিক কমিটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে ব্যর্থ এই সভাপতি ২৬ কাঠি কখনো একই করতে পারেননি। ফলে নেতাকর্মীদের কাছে জেলা বিএনপি’র সভাপতির মতো দায়িত্বপূর্ণ পদের জন্য অয়োগ্য হয়ে পরেন কাজী মনির। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উজ্জিবীত না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জেলা বিএনপি’র সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকারকে। আর মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের জন্য উচ্চ আদালতে আইনী লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকায় তৈমূরের অনুপস্থিতিতে জেলা বিএনপি’র নেতৃত্বের ভার এসে পরে সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ^াসের কাঁধে। বিএনপি’র সাইনবোর্ডে সরকারী দলের দালালী করা আজাদ বিশ^াসের নেতৃত্ব মানতে চাইছে না জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। আর তাই ২৬ সদস্যের কমিটির মধ্যে মাঠে দেখা মিলছে মাত্র দুজনের। হারাধনের গল্পের মতো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র রইলো বাকী দুই!