নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: অমঙ্গল বিতাড়নে দীপাবলিতে প্রদীপ প্রজ্জলন, ফল মিষ্টি নৈবদ্য দিয়ে ভোগ নিবেদন, পাঠা বলি, পুষ্পাঞ্জলী প্রদান আর যজ্ঞাহুতির মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে সম্পন্ন হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শ্যামা বা কালী মায়ের পূজা।
তবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা একদিনে শেষ হলেও তিন দিনব্যাপী মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা দর্শনের মধ্য দিয়ে চলবে ভক্তদের মাতৃ বন্দনা। রবিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন মন্ডপ থেকে নগরীতে শোভাযাত্রা বের হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শ্যামা পূজা।
আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, অর্থাৎ ভাইফোঁটা অনুষ্ঠিত হবে। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া।
কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভাইফোঁটার সময় বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলবে-
“ভাইয়েই কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥ যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়ে যম হল অমর। আমার হাতে ফোঁটা নিয়ে আমার ভাই হোক অমর॥”
এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করে মাথায় ধুর্বা, ধান দিয়ে প্রার্থণা করবে। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়াবে। আর ভাইও বোনকে কিছু উপহার বা টাকা দিবে।
এরআগে, গত বৃহস্পতিবার কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপসহ মন্দিও ও বাসা বাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীশ্রী শ্যামা মায়ের পূজা। সন্ধ্যার পর শুরু হয়ে ভোর রাত পর্যন্ত চলে পূজানুষ্ঠান। দেবী দূর্গার আরেকটি রূপ হচ্ছেন মা কালী বা শ্যামা। তাই মনবাসনা কামনার্থে এদিন উপবাস থেকে ভোগ দিয়ে মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলী প্রদান করেন ভক্তরা।
এদিকে, পূজা উপলক্ষ্যে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নগরীর কালীরবাজারস্থ শ্রীশ্রী রক্ষা কালী মন্দির ও টানবাজারস্থ শ্রীশ্রী দক্ষিণেশ^র কালী মায়ের মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে।
পরেরদিন শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সন্ধ্যার পর নগরীর মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা দর্শনে ঢল নামে নারী পুরুষের। শনিবারও চলবে প্রতিমা দর্শন। আর রবিবার সন্ধ্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে দেয়া হবে প্রতিমা বিসর্জন।