নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: চাঁদাবাজি বন্ধে এবং জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে আধাবেলা কর্ম বিরতি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ ষ্ট্যান্ডের অটোচালকরা। সোমবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকে দপুর পর্যন্ত এই কর্ম বিরতি পালন করেন তারা।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল নিতাইগঞ্জে গিয়ে দেখা গেছে, নিতাইগঞ্জ থেকে সৈয়দপুর-গোপচর-কাঠপট্রি-মোক্তারপুর রুটে চলাচলকারী সকল অটো (ইজিবাইক) বন্ধ রেখে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে চালকরা। চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই রুটে প্রায় ৮০/৯০ টি ইজিবাইক নিয়মিত চলাচল করে। এ জন্য তাদের কোথাও কোন চাঁদা দিতে হয় না। আকষ্মিক রবিবার বিকেলে ফুডল্যান্ডের মালিক হাবিবের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন যুবক মটর সাইকেল নিয়ে নিতাইগঞ্জ স্ট্যান্ডে এসে গাড়ি প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শরীফ ও শুভ নামে দুইজন চালককে তারা মারধর করে। বর্তমানে তারা ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এ সময় হাবিব মেয়র আইভী ও কাউন্সিলর কবীর হোসেনকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করেন এবং চাঁদা না দিলে এ রুটে অটো চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
অটোচালকরা আরো বলেন, আমরা নিরূপায় হয়ে কাউন্সিলর কবীর হোসেনের কাছে অভিযোগ জানাই। তিনি এবং নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আমাদের বলেছেন, পরবর্তীতে কেউ যদি চাঁদার দাবীতে আসে তাকে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিতে। আমরাও প্রস্তুত হয়ে আছি। এবার আর কাউকে ছাড় দেবো না। আমাদের কষ্টের কামাই কাউকে ছিনিয়ে নিতে দেবো না। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এ সকল চাঁদাবাজদের প্রতিহত করবো।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতে ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবীর হোসেন তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে ফুডল্যান্ড বেকারীর মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব এলাকায় ত্রাসের সঞ্চার করছে এবং এব্যাপারে আমি বাঁধা দেয়ায় আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করেছে। ।
তিনি আরো বলেন, আমি কাউন্সিলর হবার পর থেকেই হাবিব বিভিন্ন ভাবে এলাকায় দখলদারিত্ব স্থাপনের চেষ্টা করছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অটোষ্ট্যান্ড নিজের দখলে নিতে সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রবিবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে নিতাইগঞ্জ অটোষ্ট্যান্ড দখল নিতে আসে এবং বলেছে প্রতিদিন প্রতিটি অটো বাবদ ১০০ টাকা কওে চাঁদা দিতে হবে। এ লাইনে প্রায় ৮০/৯০ টি অটো চলাচল করে। যার ফলে গরীব মানুষদের চলাফেরা করতে সুবিধা হয়। কিন্তু তারা এ অটো ষ্ট্যান্ড দখল নিতে চায়। ষ্ট্যান্ড দখল নিতে চাইলে বাঁধা প্রদান করে শরীফ ও শুভ নামের দুই অটোচালক, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে তাদেরকে মারধর করে। বর্তমানে তারা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
তিনি আরো বলেন, অটোষ্ট্যান্ড দখল নিতে এসে সে আমাকে ও মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীকে গালমন্দ করেছে। ৪দিন অটো ব্যবসায়ী শাহজালাল সরদারকেও মারধর করেছে। এব্যাপারে আমরা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে জানালে তিনি আমাদের বলেছেন, যদি পরবর্তীতে সে এখানে আসে তাহলে তাকে বেঁধে পুলিশকে জানাবেন। এছাড়াও সে বিভিন্ন সময় ২০/২৫ টি হোন্ডা নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়, এতে করে জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী তার এ অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে চায়।