নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: আগামী ২২ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হচ্ছে সনাতন জ্ঞান, বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শুদ্ধতার দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী মায়ের পূজা। আর তাই সৌম্যাবয়ব, শুভ্র বসন, হংস-সম্বলিত, পুস্তক ও বীণাধারিণী এ দেবীর আগমনকে ঘিরে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এরই মধ্যে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিদ্যা, জ্ঞান, সঙ্গীত ও কলাধিষ্ঠাত্রীকে বরণ করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। বাসা-বাড়ীতেও চলছে বিদ্যার দেবীকে আরাধনার প্রস্তুতি। বিভিন্ন স্থানে সরস্বতী প্রতিমা বানাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারী) নগরীর নিতাইগঞ্জ শ্রী শ্রী বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মন্দির প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা গেছে, সনাতন ধর্মালম্বীদের চাহিদা মোতাবেক ছোট থেকে বড়, বিভিন্ন আঙ্গিকে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবী সরস্বতীর প্রতিমা।
বিশেষ করে প্রায় বসতবাড়ীতে পূজা হওয়ায় ছোট প্রতিমার চাহিদাই বেশী থাকায় ছোট থেকে মাঝারী আকারের প্রতিমাই বেশী নির্মান করা হয়েছে বলে জানান, প্রতিমা কারিগর সুধীর পাল।
তিনি আরো জানান, ‘বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক কার্যালয়, কিংবা সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পূজা মন্ডপ গুলোর জন্যই অর্ডার অনুযায়ী বড় প্রতিমা তৈরী করা হয়। এখন প্রত্যেকটি প্রতিমায় শেষ মুহূর্তের মাটির প্রলেপ দেয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই প্রতিমার গাঁয়ে রঙয়ের প্রলেপ দেয়া হবে।’
এছাড়াও কালীবাজারস্থ কয়েকটি মৃৎ শিল্প বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখাগেছে, বিদ্যার দেবীর পূজায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি এনে দোকানে মজুদ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
সাধারণত সরস্বতী দেবীকে পূজা করে হিন্দুরা। তবে সব বাঙালির কাছে ‘বিদ্যা’ নামক শব্দটির প্রতীক এ সরস্বতী। সনাতন ধর্মে প্রাচীন ঋষিরা ব্রহ্মের অনন্ত শক্তির অংশকে একেকজন দেব-দেবীরূপে কল্পনা করেছেন। তেমনিভাবে ব্রহ্মের যে শক্তি বিদ্যা শিক্ষাদান করেন তাকে সরস্বতী দেবী নামে পূজা-অর্চনা করা হয়।
শাস্ত্র মতে, চর্তুভুজা ব্রহ্মার মুখ থেকে আবির্ভূতা শুভ্রবর্ণা বীণাধারিণী চন্দ্রের শোভাযুক্তা দেবীই হলেন সরস্বতী। দেবী সরস্বতী শুভ্রবর্ণা শ্বেত পদ্মাসনা, শ্রী হস্তে লেখনী, পুস্তক ও বীণা। তিনি শুভ্রবস্ত্রাবৃতা হংসরূপ বাহনে উপবিষ্ট বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্তাদি বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সরস্বতী আলোকিত জীবনময়তার প্রতীক।