নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের লোভে ভাগ্নি সাফিয়া আক্তারকে (৬) পানিতে চুবিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে মামা মামা জুয়েল মিয়া (২৮)।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামানের আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘাতক জুয়েলের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী।
এরআগে গত ৫ ডিসেম্বর রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলকা থেকে ঘাতক জুয়েল মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে আড়াইহাজার উপজেলাধীন ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের মনোহরদী শীলপাড়া গ্রামের শহীদ মিয়ার পুত্র।
এব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হক জানান, ‘কযয়েক বছর আগে ভগ্নিপতি শাহীন মিয়া জুয়েলের বোন সুমি ও ভাগ্নি সাফিয়াকে রেখে রূপগঞ্জে এক গার্মেন্ট নারী শ্রমিককে বিয়ে করে চলে যায়। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে শাহীনের স্ত্রী সুমি জুয়েলের বাড়ীতে বসবাস করতে থাকে। কিন্তু ভাগ্নি সাফিয়া যাতে বোনের সম্পত্তির ওয়ারিশ হতে না পারে সেজন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৮ নভেম্বর তাকে গোসল করিয়ে দেয়ার কথা বলে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের কাছে নিযয়ে যায় জুয়েল। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে নির্জনতা পেয়ে ভাগ্নি সাফিয়ার মুখে গামছা পেঁচিয়ে তাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে।’
ওসি আরো জানান, ‘হত্যার সময় ভাগ্নি সাফিয়া বাঁচার জন্য আত্মচিৎকার করতে থাকলেও মন গলেনি ঘাতক মামার। পরবর্তীতে সাফিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করে জুয়েল তার মরদেহ নদীর কচুরিপানার নিচে রেখে চলে আসে। দুই দিন পর সাফিয়ার লাশ নদীতে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। তারপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ১শ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।’
ওসি বলেন, ‘সাফিয়ার খুনী মামা জুয়েল অবশ্য জানতো না যে, নদীর পাশে অবস্থিত একটি কারখানায় সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। পরে পুলিশ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে হত্যার দৃশ্য দেখে জুয়েলকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে এ ব্যাপারে ওইদিন রাতে নিহত শিশুর মা সুমি বেগম বাদী হয়ে ঘাতক মামা জুয়েলকে প্রধান আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর সুমির স্বজনরা সোমবার কৌশলে জুয়েলকে রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় এনে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।’