নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী এড. ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার প্রায় ২২ দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনো পর্যন্ত এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি র্যাব-পুলিশ।
এমনকি ঘটনার দিন স্থান পরিদর্শন করে পুলিশ সুপার মঈনুল হক সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শীঘ্রই জড়িতদের সনাক্তের আশ^াস দিলেও পিপি কণ্যা চেষ্টা মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করার পরেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় রহস্যাবৃত্ত রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন সচেতন মহল।
জানাগেছে, ২৩ আগস্ট বুধবার রাতে সাত খুন মামলা পরিচালনা করা পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি বুধবার নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের উল্টো দিকে অবস্থিত হাজী মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় তার মামা তৌহিদের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহুর্তে পড়া শেষ করে ওই বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে নিচ তলায় নেমে নিজেদের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল সে। ঐসময় কোচিং সেন্টারের সামনে গিয়ে বাবার বন্ধু পরিচয় দিয়ে স্যুাট টাই পরিহিত এক ব্যাক্তি মাইশাকে তার মুখে মিষ্টির সঙ্গে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে দেয়। পরে প্রাপ্তিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই সে বাসায় ফিরে আসে।
এঘটনায় মাইশার মা সেলিনা ওয়াজেদ মিনু ২৪ আগষ্ট বিকেলে অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামী করে অপহরন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে মামলাটি অধিকতর তদন্ত ও ঘটনার রহস্য উন্মোচনের লক্ষ্যে জেলা পুলিশ সুপার মো: মঈনুল হকের নির্দেশে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় স্থানান্তর করা হলেও মাইশাকে মিষ্টি খাওয়ানো স্যুট টাই পড়া সেই ‘বন্ধু’ কে এখনো সনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন।
তবে র্যাব ও পুলিশের দাবী, তারা মাইশাকে জোরপূর্বক বিষাক্ত পদার্থ খাওয়ানো ব্যাক্তিসহ প্রাইভেট কারে বসে থাকা আরো তিন যুবককে গ্রেফতারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশা তদন্তের মাধ্যমে শীঘ্রই এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে পারবেন তারা।
এব্যাপারে ডিবির এসআই মফিজুর ইসলাম পিপিএম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডিকে জানান, ‘পিপি কণ্যা মাইশা হত্যা চেষ্টা মামলার কোন অগ্রগতি নেই। তবে জড়িতদের সনাক্তে চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
এদিকে, ঘটনার পরদিন পিপি কণ্যা মাইশা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘বুধবার কোচিং শেষে বাড়ী ফেরার পথে একটি গাড়িতে করে তিনজন লোক আমার এখানে এসেছিল। কিন্তু গাড়ি থেকে নেমে কালো ব্লেজার, পার্পেল শার্ট, কালো চশমা, কালো স্যুট আর কালো প্যান্ট পরিহিত একজনই আমাকে আমার বাবার বন্ধু পরিচয় দিয়ে সিঁড়িতে এসে কথা বলে। রোকটির বয়স আনুমানিক আনুমানিক ৫০ থেকে ৫৫ হবে। আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে নানা কথা বলতে থাকে, সে আমার বাবার বন্ধু সেটা সে বুঝাতে চেষ্টা করে।’
প্রাপ্তি বলেন, ‘এরপর লোকটি মঙ্গলবার সাতু খুনের রায় হাইকোর্টে বহাল থাকায় আমার বাবা ভাল করেছে বলে জোর করে মুখে মিষ্টি খাইয়ে পানি পান করিয়ে দেয়। তারপর আমি দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে রিক্সা নিয়ে গলাচিপা মোড়ে আসতেই বাবাকে ফোন করে ঘটনা জানাই। রিক্সা নিয়ে আসার সময় আমি পিছনে ফিরে দেখি ঐ লোক গাড়িতে উঠে গাড়ি ঘুরিয়ে ২নং রেলে গেটের দিকে চলে গেছে। গাড়িতে ড্রাইভারসহ তিনজন বসা ছিল।’