নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: উৎকোচ দাবীসহ মিথ্যা মামলায় স্বজনদের জড়ানোর অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত) এবং এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক বিধবা মহিলা।
শনিবার (৬ মে) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান, ভুক্তভোগী সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল নিবাসী মৃত হোসেন আলী সউদের স্ত্রী আসমা বেগম (৫০)।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শরাফাতউল্লাহসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহন ও আত্মীয় স্বজনকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগটি করেন তিনি। বাকী অভিযুক্তরা হলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেন ও এসআই ফারুক।
সংবাদ সম্মেলনে আছমা বেগম তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে তিনি (আছমা বেগম) গত ২৫ এপ্রিল কার্যবিধি ১৪৫ ধারায় অথিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট নালিশা ভুমিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ঐ দিনই আদেশের প্রসেস নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শরাফতউল্লাহর সাথে দেখা করেন আছমা বেগম। কিন্তু ওসি আদেশের প্রসেস গ্রহন না করে দুর্ব্যবহার করে তাকে তাড়িয়ে দেন। পরের দিন আদালতের প্রসেস নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেনের কাছে গেলে তিনি প্রসেস রাখার জন্য ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। আছমা বেগম অনেক অনুনয় বিনয় করে দুই হাজার টাকাসহ প্রসেস তার হাতে দেন। এবং পরের দিন আরো ৩ হাজার টাকা দেওয়ার আশ^াস দেন।
এরপর সেই নালিশা জমিতে কাজ করার সময় আছমা বেগমের ভাই মোহাম্মদ আলীসহ তিন জনকে ধরে থানায় নিয়ে যান সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই ফারুক। আছমা বেগম এসআই ফারুকের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে তার আত্মীয় স্বজনদের গ্রেফতারের কারন জিজ্ঞাসা করলে এসআই ফারুক গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন এবং টাকা নিয়ে রাত ১১ টার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি’র সাথে দেখা করতে বলেন। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে আছমা বেগম তার কর্মচারী দেলোয়ারের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা ফারুকের কাছে পাঠান। ফারুক ৫০ হাজার টাকা দেলোয়ারের কাছ থেকে গ্রহন করে ওসির রুমে যান এবং ওসি তখন জানায় যে, আমার ভাই মোহাম্মদ আলীসহ তিন আত্মীয়কে মোবাইল কোর্টে মামলা দিয়ে কিছুক্ষণ আগে জেল খানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে আর ছাড়া সম্ভব না।
আছমা বেগম তার লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন, আমার ভাইসহ তিনজনকে নালিশা জমি হতে অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে প্রথমে দুই কিস্তিতে ৫ হাজার টাকা ও পরে ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করা সত্বেও আমার পিটিশন মামলার আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মামলা দিয়ে জেলখানায় প্রেরণ করেন। ইতিপূর্বেও পিটিশন মামলা চলাকালীণ সময়ে ওসি শরাফতউল্লাহ’র কাছে গেলে তিনি আছমা বেগমকে সম্পত্তির দাবী ছেড়ে দিয়ে বন্ড সই দিতে বলেন। ওসি শরাফতউল্লাহ আসামীদেরকে জায়গার দখল নেওয়ার চুক্তিতে লিপ্ত হয়ে তার অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের দাঁড় করিয়ে রেখে নালিশা ভুমির গাছ কেটে নিয়ে যায়। কাজেই পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কর্মরত অসৎ পুলিশ অফিসার শরাফতউল্লাহ, আবুল হোসেন ও ফারুকের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে একজন বিধবা ও তার সম্পত্তি রক্ষার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী আছমা বেগম।