নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: কেন্দ্র থেকে কমিটির তালিকা প্রেরণের প্রায় ৭২ ঘন্টা অতিবাহিত হতে চলেলেও এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা হাতে পাননি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই।
ডাক বিভাগে কোন পাশের্^ল পাঠালে দেরী হয় বিধায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে হস্তগত হওয়ার জন্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রেরণ করা হলেও এখনো পর্যন্ত সেটি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জ শাখায় এসে পৌঁছায়নি।
বিধায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পর কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে পাঠালেও তা এখন সুন্দরবনেই আটকে আছে বলে মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দরা। আর কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে যেকোন পাশের্^ল হস্তগত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্র থেকে পাঠানো জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ‘সীলগালা’ তালিকা নারায়ণগঞ্জে এসে না পৌঁছায় কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আব্দুল হাই নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডিকে জানান, গত ২৫ নভেম্বর রাতে আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পর তা পরদিন ২৬ নভেম্বর কেন্দ্র থেকে আমার বরাবর সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু আমি হতবাক হয়ে গেলাম, ২৪ ঘন্টার মধ্যে কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠানো পাশের্^ল গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাওয়ার নিয়ম থাকলেও প্রায় ৭২ ঘন্টা অতিবাহিত হতে চলেছে, কিন্তু এখনো অবদি আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা হাতে পাইনি। যার ফলে আনুষ্ঠানিক ভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না।’
আর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কুরিয়ার সার্ভিসে কমিটির তালিকা পাঠানোর পরেও এখনো অবদি নারায়ণগঞ্জে এসে কেন পাশের্^ল পৌঁছায়নি, তা নিয়ে ক্রমশই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। এর পেছনে কি কারো কোন চক্রান্ত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার তাগিদ দেন জেলা কমিটিতে পদ পাওয়া একাধিক নেতা।
জানাগেছে, গত ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং এড. আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় বছর খানেক পর অবশেষে চলতি বছরের গত ২৫ নভেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটির মধ্যে ১০টি পদ শূণ্য রয়েছে। তন্মধ্যে একজন সহ-সভাপতি খাজা রহমত উল্লাহ সম্প্রতি ইন্তেকাল করেছেন।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) কেন্দ্র থেকে ডাক যোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের বরাবর প্রেরণ করা হয়।
এরআগে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের এ পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জেলা আওয়ামীলীগের ৭০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ তালিকা:
সভাপতি: আব্দুল হাই। সিনিয়র সহ- সভাপতি মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান বাচ্চু, এড. আসাদুজ্জামান আসাদ, আরজু রহমান ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা খবির উদ্দিন, মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, আব্দুল কাদির, শিকদার গোলাম রসুল, আদিনাথ বসু ও খাজা রহমত উল্লাহ।
সাধারন সম্পাদক: আবু হাসনাত শহীদ মোঃ বাদল, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক: আলহাজ¦ জাহাঙ্গীর আলম, ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু ও ইকবাল পারভেজ।
আইন বিষয়ক সম্পাদক: এড. মাসুদ উর রউফ, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক: খলিল হাসান, ত্রান ও সম্পজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক: আলমাছ ভূঁইয়া, দপ্তর সম্পাদক: এম এ রাসেল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক: ইসহাক মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: শেখ সাইফুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক: রানু খন্দকার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক: মরিয়ম কল্পনা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক: এড. নুরুল হুদা, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক: মোহাম্মদ মানজারী আলম (টুটুল), শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক: ফেরদৌসী আলম নিলা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক: এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক: কাউসার আহমেদ পলাশ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক: নুর হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক: ডাঃ মো. নিজাম আলী।
সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন তিনজন। এরা হলেন, সুন্দর আলী, মীর সোহেল আলী, একেএম আবু সুফিয়ান।
উপ দপ্তর সম্পাদক: মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: মো. নাসির উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ: মনিরুজ্জামান মনির।
কার্যকরী সদস্য হয়েছেন ৩৪ জন। এরা হলেন, গাজী গোলাম দস্তগীর এমপি (বীর প্রতিক), নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, হোসনে আরা বাবলী এমপি, এমদাদুল হক ভুঁইয়া, আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, মাহবুবুল ইসলাম রাজন, মোশারফ হোসেন, হাজ্বী আমজাদ হোসেন, মো. মির্জা সোহেল, আবুল বাশার টুকু, সাইফুল্লাহ বাদল, মোহাম্মদ মতিউর রহমান, শওকত আলী, মাসুম রহমান, হালিম শিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের ডিলার, বিএম কামরুজ্জামান ফারুক, তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, শাহজাহান ভূঁইয়া, শাহজালাল মিয়া, হেলো সরকার, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, মহফুজুর রহমান কালাম, আব্দুর রশিদ, সিরাজুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন সাজনু, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, শীলা রাণী পাল, অ্যাডভোকেট ইসহাক, শামসুজ্জামান ভাষানী, মেজর (অব.) মশিউর রহমান, সাদেকুর রহমান, মজিবুর মন্ডল, ইউসুফ ভূইয়া।
তবে মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হলেও জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে কোন পদ পায়নি সাংসদ শামীম ওসমান।