নিউজ প্রাচ্যের ডান্ডি: নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কমান্ডার গোপিনাথ দাস বলেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে কিন্তু আমরা কোন একটি ঘটনার বিচার পাইনি। রংপুরে ফেসবুকের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে তাদের বাড়ি ঘরে আগুন দেয় ও লুটপাট করে। আগের ঘটনাগুলির সুষ্ঠ বিচার সম্পন্ন হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে কেউ সাহস পেতো না।
রংপুরে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ব্যঙ্গ চিত্র পোষ্ট করার অভিযোগে হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতি কমান্ডার গোপিনাথ দাস আরো বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, তাই তার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু কার জন্য এদেশ স্বাধীন করলাম। এদেশ স্বাধীন করেছিলাম সকল ধর্মের মানুষ এক সাথে মিলেমিশে থাকার জন্য। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ফেসবুকে অপপ্রচার চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও ভাংচুর এবং বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ চালাচ্ছে । আমরা রংপুরে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই ।
মহানগর পূজা উদযাপণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, এদেশে যখনই কোন মানবিক বিপর্যয় এসেছে, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু আজ আমাদের উপর বর্বরোচিত হামলায় সরকার নিশ্চুপ। এভাবে যদি হামলা ও নির্যাতন চলতে থাকে, তাহলে এদেশ থেকে একদিন সংখ্যালঘু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এর আগে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসির নগরে হামলার বিচার আমরা পাইনি। এভাবে হামলা চালাবে আর সাহায্য করবে আমরা তা চাই না। আমরা চাই এদেশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে বসবাসের অধিকার। তাই এসব অপ্রীতিকর ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম সাহা, কোষাধ্যক্ষ সুশীল দাস, প্রচার সম্পাদক তপন ঘোপ সাধু, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, সাধারণ সম্পাদক নিমাই দে, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য্য, জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রির্চাজ সৌরভ দেউরী,ফতুল্লা থানা কমিটির সভাপতি রঞ্জিত মন্ডল, সদর থানার সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, বন্দর থানা কমিটির সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি কালিপদ মল্লিক, সোনারগাঁ থানা কমিটির সভাপতি লোকনাথ দত্ত, আড়াইহাজার থানা কমিটির সভাপতি হারাধন দে , সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, বন্দর থানার সিনিয়র সহ সভাপতি মনোরঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক রিপন দাস, জেলা শারদাঞ্জলি ফোরামের সভাপতি আশিষ কুমার দাস, জেলা জাগো হিন্দু পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ দাস কাজল, সাধারণ সম্পাদক সুজন দাস, বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি আনন্দ সোরাগী প্রমুখ ।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।